ই-পাসপোর্ট হয়েছে কিনা চেক: সহজ গাইড

5/5 - (2 votes)

ই-পাসপোর্ট মানে আধুনিক একটা পাসপোর্ট, যেখানে আপনার ব্যক্তিগত আর বায়োমেট্রিক তথ্য (যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি) ডিজিটালভাবে সেভ করা থাকে। বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার পর ভ্রমণ করা আগের চেয়ে অনেক সহজ আর নিরাপদ হয়েছে। কিন্তু অনেকেই ভাবেন—কীভাবে বুঝবেন যে আপনার পাসপোর্টটা ই-পাসপোর্ট কিনা? চিন্তা নেই! এই লেখায় আমরা সহজে দেখে নেব কিভাবে তা চেক করবেন।

ই-পাসপোর্ট কী এবং কেন জরুরি?

ই-পাসপোর্টে একটা ইলেকট্রনিক চিপ থাকে, যেখানে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি, আর আইরিসের স্ক্যান রাখা হয়। এটা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য, আর এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন আর ভিসা প্রসেসিং দ্রুত করে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ই-পাসপোর্ট নকল হওয়া রোধ করে।

কিভাবে জানবেন আপনার পাসপোর্ট ই-পাসপোর্ট কিনা?

অনেকেই জানতে চান, অনলাইনে ই-পাসপোর্ট চেক করবেন কীভাবে। চিন্তা করবেন না! ধাপে ধাপে পুরো প্রসেসটা আমরা নিচে দেখাচ্ছি।

কীভাবে ই-পাসপোর্টের স্ট্যাটাস চেক করবেন সহজে

ধাপ ১: আবেদন স্ট্যাটাস চেক

আপনি যদি ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে থাকেন, তাহলে স্ট্যাটাস দেখে জানতে পারবেন পাসপোর্ট রেডি হয়েছে কিনা। নিচের ধাপগুলো ফলো করুন:

  1. epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে যান।
  2. মেনু থেকে “Application Status” সিলেক্ট করুন।
  3. আপনার আবেদন নম্বর (Application ID) আর জন্মতারিখ দিন।
  4. CAPTCHA পূরণ করে “Submit” চাপুন।
  5. এখানে আপনার পাসপোর্টের স্ট্যাটাস দেখাবে। যদি “Printed” লেখা আসে, তাহলে বুঝবেন পাসপোর্ট রেডি!
ই-পাসপোর্ট হয়েছে কিনা চেক

টিপস:

  • আবেদন নম্বর হারালে, রিসিট বা ফর্ম দেখে খুঁজে নিন।
  • যদি “Processing” দেখায়, তাহলে কয়েকদিন অপেক্ষা করুন।

ধাপ ২: পাসপোর্টের ফরম্যাট দেখে চেক

ই-পাসপোর্ট আর সাধারণ পাসপোর্টের মধ্যে কয়েকটা পার্থক্য আছে। দেখে সহজেই ধরতে পারবেন এটা ই-পাসপোর্ট কিনা:

  • মলাটের উপরে “e-Passport” লেখা থাকে।
  • নিচে ছোট একটা চিপ আইকন থাকে।
  • ই-পাসপোর্টে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট আর অন্যান্য বায়োমেট্রিক তথ্য সেভ থাকে।

ধাপ ৩: মোবাইলে এসএমএস দিয়ে চেক

মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে সহজেই আপডেট পেতে পারেন।

  1. মোবাইলের মেসেজ অপশনে যান।
  2. টাইপ করুন: EP [স্পেস] Application ID
  3. এসএমএস পাঠান ১৭৩৪ নম্বরে।
  4. কিছুক্ষণের মধ্যে স্ট্যাটাস জেনে যাবেন।

ধাপ ৪: পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ

অনলাইন বা মোবাইলে স্ট্যাটাস পেতে সমস্যা হলে সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে যান। আবেদন নম্বর আর দরকারি কাগজপত্র সঙ্গে নিন। কর্মকর্তারা আপনাকে পাসপোর্টের বর্তমান অবস্থা জানাবে।

এভাবেই সহজে ই-পাসপোর্টের সব আপডেট চেক করতে পারবেন!

ই-পাসপোর্ট না পেলে কী করবেন?

যদি এখনো আপনার ই-পাসপোর্ট না আসে বা তৈরি না হয়, চিন্তা করবেন না। কিছু সহজ উপায়ে সমাধান করতে পারেন।

  • স্ট্যাটাস চেক করুন: মাঝে মাঝে তথ্য আপডেট হতে সময় লাগে, তাই আবার চেষ্টা করে দেখুন।
  • অফিসে অভিযোগ দিন: যদি ২-৩ মাসেও পাসপোর্ট না পান, সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানান।
  • হেল্পলাইন বা ইমেইলে যোগাযোগ করুন: কাস্টমার সার্ভিস নম্বরে ফোন করুন বা ইমেইল পাঠিয়ে সাহায্য নিন।

ই-পাসপোর্ট পেতে কতদিন লাগে?

সাধারণত ২১-৩০ দিন সময় লাগে। তবে জরুরি পরিষেবায় (Express Service) ৭-১০ দিনের মধ্যেও পেতে পারেন।

ই-পাসপোর্ট নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্ন

  1. মেয়াদ কতদিন?
    ৫ বা ১০ বছরের মেয়াদের জন্য ইস্যু হয়।
  2. পুরানো পাসপোর্ট বদল করা যাবে?
    হ্যাঁ, পুরানো পাসপোর্ট জমা দিয়ে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
  3. ই-পাসপোর্টে ভিসা পাওয়া কি সহজ?
    ইমিগ্রেশন ও ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সহজ এবং দ্রুত হয়।
  4. বায়োমেট্রিক ডেটা কি নিরাপদ?
    হ্যাঁ, উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে বায়োমেট্রিক ডেটা সুরক্ষিত থাকে।

সমস্যা হলে কী করবেন?

  • ওয়েবসাইটে সমস্যা?
    সার্ভার সমস্যা থাকলে কিছুক্ষণ পরে আবার চেষ্টা করুন।
  • স্ট্যাটাস না দেখালে?
    সঠিক আবেদন নম্বর দিয়েছেন কি না, তা যাচাই করুন।
  • আবেদন বাতিল হলে?
    কারণ জানতে অফিসে যোগাযোগ করুন এবং প্রয়োজনে আবার আবেদন করুন।

উপসংহার

ই-পাসপোর্টের আবেদন ও স্ট্যাটাস চেক করা খুবই সহজ। এই গাইডের ধাপগুলো অনুসরণ করলে ঝামেলা ছাড়াই পাসপোর্ট পেতে পারবেন। যেকোনো সমস্যায় কাস্টমার সার্ভিসের সাহায্য নিন, আর নিশ্চিন্তে আপনার ভ্রমণের প্রস্তুতি নিন!

মন্তব্য করুন