ই-পাসপোর্ট মানে আধুনিক একটা পাসপোর্ট, যেখানে আপনার ব্যক্তিগত আর বায়োমেট্রিক তথ্য (যেমন ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি) ডিজিটালভাবে সেভ করা থাকে। বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালু হওয়ার পর ভ্রমণ করা আগের চেয়ে অনেক সহজ আর নিরাপদ হয়েছে। কিন্তু অনেকেই ভাবেন—কীভাবে বুঝবেন যে আপনার পাসপোর্টটা ই-পাসপোর্ট কিনা? চিন্তা নেই! এই লেখায় আমরা সহজে দেখে নেব কিভাবে তা চেক করবেন।
ই-পাসপোর্ট কী এবং কেন জরুরি?
ই-পাসপোর্টে একটা ইলেকট্রনিক চিপ থাকে, যেখানে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ছবি, আর আইরিসের স্ক্যান রাখা হয়। এটা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য, আর এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন আর ভিসা প্রসেসিং দ্রুত করে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ই-পাসপোর্ট নকল হওয়া রোধ করে।
কিভাবে জানবেন আপনার পাসপোর্ট ই-পাসপোর্ট কিনা?
অনেকেই জানতে চান, অনলাইনে ই-পাসপোর্ট চেক করবেন কীভাবে। চিন্তা করবেন না! ধাপে ধাপে পুরো প্রসেসটা আমরা নিচে দেখাচ্ছি।
কীভাবে ই-পাসপোর্টের স্ট্যাটাস চেক করবেন সহজে
ধাপ ১: আবেদন স্ট্যাটাস চেক
আপনি যদি ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে থাকেন, তাহলে স্ট্যাটাস দেখে জানতে পারবেন পাসপোর্ট রেডি হয়েছে কিনা। নিচের ধাপগুলো ফলো করুন:
- epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে যান।
- মেনু থেকে “Application Status” সিলেক্ট করুন।
- আপনার আবেদন নম্বর (Application ID) আর জন্মতারিখ দিন।
- CAPTCHA পূরণ করে “Submit” চাপুন।
- এখানে আপনার পাসপোর্টের স্ট্যাটাস দেখাবে। যদি “Printed” লেখা আসে, তাহলে বুঝবেন পাসপোর্ট রেডি!
টিপস:
- আবেদন নম্বর হারালে, রিসিট বা ফর্ম দেখে খুঁজে নিন।
- যদি “Processing” দেখায়, তাহলে কয়েকদিন অপেক্ষা করুন।
ধাপ ২: পাসপোর্টের ফরম্যাট দেখে চেক
ই-পাসপোর্ট আর সাধারণ পাসপোর্টের মধ্যে কয়েকটা পার্থক্য আছে। দেখে সহজেই ধরতে পারবেন এটা ই-পাসপোর্ট কিনা:
- মলাটের উপরে “e-Passport” লেখা থাকে।
- নিচে ছোট একটা চিপ আইকন থাকে।
- ই-পাসপোর্টে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট আর অন্যান্য বায়োমেট্রিক তথ্য সেভ থাকে।
ধাপ ৩: মোবাইলে এসএমএস দিয়ে চেক
মোবাইল থেকে এসএমএসের মাধ্যমে সহজেই আপডেট পেতে পারেন।
- মোবাইলের মেসেজ অপশনে যান।
- টাইপ করুন: EP [স্পেস] Application ID
- এসএমএস পাঠান ১৭৩৪ নম্বরে।
- কিছুক্ষণের মধ্যে স্ট্যাটাস জেনে যাবেন।
ধাপ ৪: পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ
অনলাইন বা মোবাইলে স্ট্যাটাস পেতে সমস্যা হলে সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে যান। আবেদন নম্বর আর দরকারি কাগজপত্র সঙ্গে নিন। কর্মকর্তারা আপনাকে পাসপোর্টের বর্তমান অবস্থা জানাবে।
এভাবেই সহজে ই-পাসপোর্টের সব আপডেট চেক করতে পারবেন!
ই-পাসপোর্ট না পেলে কী করবেন?
যদি এখনো আপনার ই-পাসপোর্ট না আসে বা তৈরি না হয়, চিন্তা করবেন না। কিছু সহজ উপায়ে সমাধান করতে পারেন।
- স্ট্যাটাস চেক করুন: মাঝে মাঝে তথ্য আপডেট হতে সময় লাগে, তাই আবার চেষ্টা করে দেখুন।
- অফিসে অভিযোগ দিন: যদি ২-৩ মাসেও পাসপোর্ট না পান, সরাসরি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে অভিযোগ জানান।
- হেল্পলাইন বা ইমেইলে যোগাযোগ করুন: কাস্টমার সার্ভিস নম্বরে ফোন করুন বা ইমেইল পাঠিয়ে সাহায্য নিন।
ই-পাসপোর্ট পেতে কতদিন লাগে?
সাধারণত ২১-৩০ দিন সময় লাগে। তবে জরুরি পরিষেবায় (Express Service) ৭-১০ দিনের মধ্যেও পেতে পারেন।
ই-পাসপোর্ট নিয়ে সাধারণ কিছু প্রশ্ন
- মেয়াদ কতদিন?
৫ বা ১০ বছরের মেয়াদের জন্য ইস্যু হয়। - পুরানো পাসপোর্ট বদল করা যাবে?
হ্যাঁ, পুরানো পাসপোর্ট জমা দিয়ে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। - ই-পাসপোর্টে ভিসা পাওয়া কি সহজ?
ইমিগ্রেশন ও ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সহজ এবং দ্রুত হয়। - বায়োমেট্রিক ডেটা কি নিরাপদ?
হ্যাঁ, উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে বায়োমেট্রিক ডেটা সুরক্ষিত থাকে।
সমস্যা হলে কী করবেন?
- ওয়েবসাইটে সমস্যা?
সার্ভার সমস্যা থাকলে কিছুক্ষণ পরে আবার চেষ্টা করুন। - স্ট্যাটাস না দেখালে?
সঠিক আবেদন নম্বর দিয়েছেন কি না, তা যাচাই করুন। - আবেদন বাতিল হলে?
কারণ জানতে অফিসে যোগাযোগ করুন এবং প্রয়োজনে আবার আবেদন করুন।
উপসংহার
ই-পাসপোর্টের আবেদন ও স্ট্যাটাস চেক করা খুবই সহজ। এই গাইডের ধাপগুলো অনুসরণ করলে ঝামেলা ছাড়াই পাসপোর্ট পেতে পারবেন। যেকোনো সমস্যায় কাস্টমার সার্ভিসের সাহায্য নিন, আর নিশ্চিন্তে আপনার ভ্রমণের প্রস্তুতি নিন!